টিএসসিতে ‘সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা মঞ্চ’ আয়োজনের সমাপ্তি

121
TSC
ছবি: রোকনুজ্জামান তোহা
শেয়ার করুন

রিফাত রহমান::

‘সংস্কৃতির শুদ্ধ আলোয় মুক্ত করো প্রাণ ’এই স্লোগানকে সামনে রেখে টিএসসি ভিত্তিক ১৭টি সংগঠনের উদ্যোগে পাঁচ দিনব্যাপী আয়োজিত হয়েছে ‘সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা মঞ্চ’ শিরোনামে বিশেষ আয়োজন। ৫ সেপ্টেম্বর সোমবার টিএসসির পায়রা চত্বরে শুরু হওয়া এ আয়োজনটির সমাপ্তি ঘটে আজ।   

এই পাঁচ দিনে টিএসসির সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর পরিবেশনার মধ্যে ছিল সংগীত, আবৃত্তি, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, সমবেত নৃত্য, পুঁথি পাঠ, দেয়ালচিত্র, উন্মুক্ত চলচ্চিত্র, মঞ্চনাটক, মূকাভিনয়, পালাগান, গণসংগীত, যন্ত্রসঙ্গীতসহ নানান সাংস্কৃতিক আয়োজন।

এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ, প্রভাতফেরী সাংস্কৃতিক সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাট্য সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কুইজ সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নৃত্য সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ সংসদ, স্লোগান ৭১’, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম একশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ট্যুরিস্ট সোসাইটি এবং ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি।

ছবি: মো: কামরুল হাসান

উল্লেখ্য, ব্যক্তি স্বাধীনতা ও পারস্পরিক সহিষ্ণুতার ওপর নিজেদের শ্রদ্ধাশীলতা ও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনুভূত দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকেই, টিএসসিভিত্তিক সতেরোটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা মঞ্চ’ শিরোনামে দেশীয় সংস্কৃতি উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল। ৫ দিনব্যাপী এই উৎসবের শেষদিন ছিল সংগীত, নৃত্য, নাটক, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ছাড়াও আয়োজক সংগঠনগুলোর নিজস্ব পরিবেশনা।

আয়োজকদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের সাধারণ সম্পাদক জয় দাস বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে ধর্মান্ধতা দূর করা সম্ভব। প্রত্যেক মানুষের নিজের মত করে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। আমরা সবাই চাই প্রত্যেক মানুষের মধ্যে ব্যক্তিস্বাধীনতার এবং একে অপরকে তাদের মত করে গ্রহণ করার মানসিকতা বজায় থাকুক।

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘দেশের যে কোন ক্রান্তি লগ্নে টিএসসি সদা জাগ্রত, আমাদের এই সম্মিলিত আয়োজনের মাধ্যমে আমরা আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করছি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক কে. এম ইতমাম ইসলাম বলেন, ‘সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার অধিকার আমাদের সাংবিধানিক অধিকার৷ আমরা সম্মিলতভাবে একত্রিত’

মিডিয়া কর্মী ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাগীব রহমান বলেন, ‘বর্তমানে বৈশ্বিকভাবেই মানুষে মানুষে সহিষ্ণুতার জায়গা এবং একে অপরকে গ্রহণ করে নেওয়ার মানসিকতার অভাব দেখা যাচ্ছে। এই বিষবাষ্প আরো নানা ধরনের সহিংসতা ও সামাজিক অবক্ষয়ের জায়গা তৈরি করে দিচ্ছে। এই অবক্ষয় দূরীকরণের জন্য আমাদের সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা করতে হবে৷ একে অপরের সংস্কৃতিকে ভালবাসতে হবে। সম্মান করতে হবে।’

প্রভাতফেরী সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বিজয় ডিইউ টাইমজকে জানান, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উগ্রবাদ, মৌলবাদের কোনো স্থান নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা মৌলবাদকে সমর্থন করে না।”

ছবি: মো: কামরুল হাসান

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও গণমাধ্যম কর্মী সাহস মুস্তাফিজ বলেন, ‘ধর্মান্ধতা ও উগ্রবাদ একটি স্বাধীন দেশের জন্য হুমকি স্বরূপ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধসহ সকল ক্রান্তিলগ্নে সজাগ ছিল। এখনো আমরা জেগে আছি।’


শেয়ার করুন

LEAVE A REPLY

Specify Facebook App ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Facebook Login to work

Please enter your comment!
Please enter your name here