রিফাত রহমান সাদিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাসে প্রথমবারের মতো হয়ে গেলো দুই দিনব্যাপী ‘গবেষণা ও প্রকাশনা মেলা’ । ২২ ও ২৩ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ মেলার অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও গবেষণাকেন্দ্রের উদ্ভাবন, গবেষণা ও প্রকাশনা তুলে ধরা হয়।
ইন্ডাস্ট্রি (শিল্প)-একাডেমিয়া সম্পর্ক স্থাপন এবং প্রকাশনা, গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান।
২২ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টায় গবেষণা ও প্রকাশনা মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যারয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ মেলায় অনুষদগুলোর জন্য ১০টি, ইনস্টিটিউটগুলোর জন্য ১টি, প্রকাশনা সংস্থার জন্য ১টি, গবেষণাকেন্দ্রগুলোর জন্য ১টিসহ মোট ১৩টি প্যাভিলিয়ন ছিলো। এছাড়া ছিলো একটি কেন্দ্রীয় মঞ্চ। মেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত প্রকাশনাসহ উল্লেখযোগ্য প্রকাশনাগুলো (গ্রন্থ, জার্নালের বিশেষ সংখ্যা, গবেষণা প্রকল্প, পোস্টার, ফ্লায়ার, ব্রুশিয়ার প্রদর্শন ও উপস্থাপন করা হয়। মেলায় ৫৫টি গ্রন্থ, ২৬টি বিশেষ জার্নাল, ২১৬টি গবেষণা প্রকল্প, ৬২৪টি পোস্টার এবং ৮৬টি ফ্লায়ার-ব্রুশিয়ার স্থান পেয়েছে।
মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও গবেষণাকেন্দ্র অংশগ্রহণ করেছে এবং প্রত্যেকের উপস্থাপনা ছিলো। প্রতিটি অনুষদের প্যাভিলিয়নের সঙ্গে অনুষদভুক্ত বিভাগগুলোর একটি করে স্টল ও ইনস্টিটিউটের প্যাভিলিয়নের সঙ্গে প্রতিটি ইনস্টিটিউটের একটি করে স্টল ছিলো। ২২ অক্টোবর উদ্বোধনীর দিন বেলা তিনটায় ছিলো কলা, বিজ্ঞান, আইন, ব্যবসায় শিক্ষা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের পৃথক উপস্থাপনা। ২৩ অক্টোবর সমাপনী দিনে সকাল থেকে ছিলো জীববিজ্ঞান, ফার্মাসি, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি এবং চারুকলা অনুষদের পৃথক উপস্থাপনা। এ ছাড়া সব ইনস্টিটিউটের পক্ষে একটি এবং গবেষণাকেন্দ্র বা ব্যুরোর পক্ষে একটি উপস্থাপনা ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, অ্যালামনাই ও আমন্ত্রিত অতিথিদের অংশগ্রহণে মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত ছিলো।
মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে কবিতা, রচনা ও ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা এবং শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত প্রতিটি জার্নালের বিশেষ সংখ্যার শ্রেষ্ঠ আর্টিকেল লেখককে সনদ, ক্রেস্ট ও প্রাইজমানি দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রত্যেক অনুষদ, ইনস্টিটিউট ও সেন্টার কর্তৃক উপস্থাপিত পোস্টারের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদের পুরস্কার হয়। মেলার সার্বিক শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি, রোভার স্কাউট ও রেঞ্জার ইউনিটের শিক্ষার্থীরা দায়িত্ব পালন করে।