শতবর্ষী উর্দু বিভাগের সাবেক ছাত্রীর রচনা সমগ্র “তাখলীকাতে জাহানারা” গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব ২৩ মে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার আর্টস অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দীন আহমদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির, অধ্যাপক ড. জাফর আহমদ ভূইয়া, অধ্যাপক এ বি এম ছিদ্দিকুর রহমান নিজামী, অধ্যাপক শামীম বানু সহ কবি হাইকেল হাশমী
প্রকাশনা উৎসবের সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ড. সদরুল আমীন। উপস্থাপনায় ছিলেন গ্রন্থটির অন্যতম সম্পাদক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ গোলাম রববানী।
উর্দু বিভাগের শতবর্ষের পথচলায় বিভাগের ছাত্র-শিক্ষকগণ সাহিত্য ও গবেষণায় অনন্য অবদান রেখেছেন। উর্দু বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক সহকারী অধ্যাপক জাহানারা চৌধুরীর উর্দু গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ নিয়ে একটি সমগ্র “তাখলীকাতে জাহানারা” নামে সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে। গ্রন্থটির যৌথভাবে সংকলন ও
সম্পাদনা করেন উর্দু বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ গোলাম রববানী ও ইংরেজী বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক নাফিসা জামাল।
গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে সাহিত্য ও গবেষণা কেন্দ্র। গ্রন্থটিতে ৫৭টি কবিতা, ৭টি প্রবন্ধ ও ১টি ছোটগল্প রয়েছে। এতে গ্রন্থটি সম্পর্কে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিয়াউর রহমান সিদ্দীকীর মতামত রয়েছে। গ্রন্থটির মূল লেখক জাহানারা চৌধুরীর (১৯২২-১৯৮৪) পূর্বপুরুষরা খুরাসান থেকে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন এবং মালদায় বসতি স্থাপন করেন।
জাহানারা চৌধুরীর জন্ম পাটনায়। প্রাথমিক শিক্ষা কলকাতায় হয়। ১৯৪৬ সালে কুমিল্লার নূরুল্লাহ চৌধুরীকে বিয়ে করেন। ১৯৫০ সালে স্বামীর সাথে ঢাকায় চলে আসেন এবং ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করেন। ১৯৫৫ সালে তার স্বামী আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। জাহানারার জন্য কঠিন সময় ছিল তখন। তিনি এই সমস্যায় ভীত হননি, তিনি সাহস এবং সংকল্পের সাথে কাজ করেছিলেন।
পরবর্তীতে অনেকের পরামর্শে জাহানারা চৌধুরী ১৯৬২ সালে ঢাকা বোর্ড থেকে প্রাইভেটভাবে এসএসসি পরীক্ষা দিন। ১৯৬৪ সালে ইডেন গার্লস কলেজ থেকে আইএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু ও
ফারসি বিভাগ থেকে ১৯৬৭ সালে উর্দুতে অনার্স এবং ১৯৬৮ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম গার্লস কলেজ জাহানারাকে উর্দুর প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেয়। পরে তাকে ঢাকায় জগন্নাথ কলেজে উর্দুর শিক্ষক হিসেবে বদলি করা হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এই কলেজে শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেন।